বানিয়াচংয়ের সোনালী ধানে স্বপ্ন বুনেছেন কৃষকরা

বানিয়াচংয়ের সোনালী ধানে স্বপ্ন বুনেছেন কৃষকরা

কাওছার আহমেদ রাসেল, বানিয়াচং
মাঠে মাঠে সোনালী ধান।বোরো ধানের ভান্ডার হিসেবে পরিচিত হবিগঞ্জের বানিয়াচং।সোনালী ধানে স্বপ্ন বুনেছেন কৃষক।উপজেলার মাকালকান্দি.মকা ওকাগাপাশার হাওরসহ বিভিন্ন হাওরে বোরো ধান কাটা শুরু হয়েছে।এ ধানেই চলে গৃহস্থ ঘরের সারা বছরের খোরাক।ধানকে ঘিরেই চাঙা হয় গ্রামের প্রান্তিক পর্য়ায়ের অর্থনীতি।এই অঞ্চলের কৃষক পরিবারের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, বিয়ে-শাদি ও সংসার খরচ চলে উৎপাদিত ধানের বড় একটি অংশ বিক্রি করে ।ধান কাটা, মাড়াই ও ঝাড়াইয়ের মধ্য দিয়ে কৃষক ঘরে ওহাওরে এখন বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ ।সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্য়ন্ত বোরো ধান ঘরে তোলায় ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানীরা। চলতি বছর ফলন ভালো হওয়ায় কৃষক পরিবারের সবাই খুবই খুশি।প্রান্তিক পর্য়ায়ের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায় সরকারী ভাবে সার,বীজ বা ভর্তুকি মূল্যে কোন কৃষি যন্ত্রপাতি তারা উপজেলা কৃষি অফিস থেকে পাননি।

চলতি মৌসুমে বানিয়াচংয়ে বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।যদিও খরার কারনে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার আশংকাও আছে কৃষকদের মনে।উপজেলার বিভিন্ন হাওরে ইনব্রিড ওহাইব্রিড কয়েক জাতের ধান চাষাবাদ হয়েছে।ইনব্রিডের মধ্যে ব্রি-৮৮,ব্রি-৮৯,ব্রি-৯৬ হাইব্রিডে বিএডিসি এস এল ৮,হীরা,এসি আই,আফতাব ওসুগন্ধা জাতের চাষাবাদই বেশি হয়েছে।উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে ছোটবড় ৫০টি বন-হাওরে ৩৩ হাজার ৭০৫ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের চাষাবাদ হয়েছে। যেখান থেকে ধান উৎপাদন হবে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৫০০মেট্রিক টন,।এই উৎপাধিত ধান থেকে চাল উৎপাদনের সম্ভাবনা প্রায় ১ লক্ষ ১০ হাজার মেট্রিকটন।যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় কোটি টাকা।

ফলন ভাল হওয়ায় এবং আগাম ধান কাটতে পারায় কৃষকরা খুবই আনন্দিত।উপজেলার কৃষকরা বলছেন, প্রাকৃতিক কোনো দুর্য়োগ দেখা না দিলে এবার বাম্পার ফলন ঘরে তুলতে পারবেন বলে আশাবাদী তারা।

উপজেলার গোল বগী গ্রামের বাসিন্দা সোহাগ মিয়া বলেন, আমাদের এখানে মকার হাওর অনেক বড় ।মকার হাওরের প্রায় জমিতে ধান কাটা চলছে। ফলন ভালো হলেও এবার উৎপাদন ও ধান কাটাসহ শ্রমিকদের খরচ একটু বেশি। তবুও আলহামদুলিল্লাহ। ভালোয় ভালোয় সব ধান ঘরে তুলতে পারলেই আমরা সন্তুষ্ট।

উপজেলার ইকরাম গ্রামের কৃষক সালাম মিয়া বলেন, ধানের ফলন এ বছর ভালোই হয়েছে। তবে প্রাকৃতিক কোনো দুর্য়োগ ঝড়-তুফান, শিলাবৃষ্টি না হলে আশা করি আমরা লাভবান হবো ইনশাল্লাহ।

মাঠ পর্য়ায়ে সরকারী ভাবে কৃষকরা কি সেবা পাচ্ছেন জানতে চাইলে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ এনামুল হক বলেন,প্রান্তিক পর্য়ায়ের কৃষকদের প্রত্যেককে সরকারী ভাবে ৫ কেজি ধান বীজ,১০ কেজি ভিএপি ও১০ কেজি এমওপি সার দেয়া হয়েছে।এছাড়া কৃষকদের শেড তৈরী করার জন্য বেড প্লান্টার দেয়া হয়েছে।

কৃষিবিদ এনামুলা হক এপ্রতিবেদককে আরো বলেন, কিছুকিছু হাওরে ধান কাটা শুরু হয়েছে।মাঠ পর্য়ায়ের কৃষকদের আমরা পরামর্শ দিচ্ছি যাতে ৮০ শতাংশ ধান পাকলে তারপরই কাটেন।আবহাওয়া ভালো থাকলে কয়েক দিনের মধ্যেই পুরোদমে ধান কাটা শুরু হবে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম সাথী বলেন, জেলা প্রসাশক মহোদয়ের দিক নির্দেশনা পেলে উপজেলা প্রসাশনের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে ধান কাটা উৎসব ঘোষনা করা হবে।আলহামদুলিল্লাহ এবছর বোরো ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে।আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে আশা করি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই হাওরাঞ্চলের শতভাগ ধান কাটা সম্পন্ন হয়ে যাবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.




© All rights reserved ©ekusheysylhet.com
Design BY DHAKA-HOST-BD
weeefff